ঘুম এর সমস্যার সমাধান: কার্যকরী পরামর্শ

ঘুম একজন মানুষের সুস্থ থাকার অন্যতম নিয়ামক। স্বাভাবিক প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। দিনে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে তা স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে। তবে বয়স অনুযায়ী শরীরে ঘুমের চাহিদা ভিন্ন হয়।

সাধারণত পূর্ণবয়স্ক মানুষদের ৭-৮ ঘণ্টা, শিশুদের ৯-১৩ ঘণ্টা, নবজাতক বাচ্চাদের ১২-১৭ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। ঘুমানোর মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, টক্সিন নামক পদার্থ শরীর থেকে বের করে দিয়ে কর্মক্ষমতাও বাড়ে। সুতরাং পরবর্তী দিনের শক্তি ও দক্ষতার অনেকটাই নির্ভর করে ব্যক্তির পর্যাপ্ত ঘুমের ওপর।

যদি আপনি ঘুমের সমস্যায় ভোগেন, তবে কিছু সহজ পদক্ষেপ রয়েছে যা আপনাকে ভালো ঘুমে সহায়তা করতে পারে।
১. নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি করুন

প্রতিদিন একই সময়ে শুয়ে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি আপনার শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়ে উঠবে, যা ঘুমের গুণগত মান উন্নত করবে। সপ্তাহের সাত দিনও এই নিয়ম মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ।

২. ঘুমের পরিবেশ প্রস্তুত করুন

ঘুমের পরিবেশ যেন শান্ত এবং অন্ধকার হয়, এটি নিশ্চিত করুন। রুমটি ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্যকারী উপকরণ যেমন ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া, আপনার বিছানায় যেন আরামদায়ক মেট্রেস এবং বালিশ থাকে, তা নিশ্চিত করুন।

৩. ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল পরিহার করুন

বিকেল ৩টার পর কফি, চা অথবা অন্য কোন ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় খাওয়া এড়িয়ে চলুন। একইভাবে, অ্যালকোহলও ঘুমের গুণগত মান কমাতে পারে, তাই এটি রাতে পরিহার করা উচিত।

৪. দূরে রাখুন ফোন ল্যাপটপ

আমরা অনেকেই বিশ্রাম নিতে কিংবা ঘুমের আগে ফেসবুক থেকে ঢু মেরে আসি। কিন্তু এতে ঘুম আসার পরিবর্তে মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করে চোখ থেকে ঘুম তাড়িয়ে দেয়। তাই ঘুমের সমস্যা দূর করতে চাইলে দীর্ঘসময় ধরে মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
৫. শিথিলতার কৌশল অবলম্বন করুন

যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসের কৌশলগুলো ঘুমের গুণমান উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। এই ধরনের শিথিলতা প্রযুক্তিগুলি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শরীর ও মনে শান্তি এনে দিতে পারে।

৬. সুষম খাদ্য ও ব্যায়াম

প্রতিদিন পর্যাপ্ত ব্যায়াম এবং সুষম খাদ্য গ্রহণও ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। তবে, শারীরিক কার্যকলাপ রাতে ঘুমানোর আগে খুব কাছে করা উচিত নয়, কারণ এটি ঘুমে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

৭. মেডিক্যাল সহায়তা গ্রহণ করুন

যদি ঘুমের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে এবং আপনাকে দৈনন্দিন জীবনে প্রভাবিত করে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞরা সমস্যার কারণ চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে পারেন এবং উপযুক্ত চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারেন।

ঘুমের সমস্যা সমাধানের জন্য উপরের পদক্ষেপগুলো মেনে চললে আপনি ধীরে ধীরে ভালো ঘুমের অভিজ্ঞতা পাবেন। সুস্থ ঘুম মানেই সুস্থ জীবন, তাই এই অভ্যাসগুলো নিয়মিতভাবে অনুসরণ করলে সমাধান হতে পারে আপনার ঘুমের সমস্যার।